বাংলাদেশের সরকারি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কলেজের সম্পূর্ণ তালিকা (২০২৪ আপডেট)
বাংলাদেশে কেন সরকারি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং জনপ্রিয়?
সরকারি নার্সিং কলেজগুলোতে উচ্চমানের শিক্ষা এবং খরচ কম হওয়ার কারণে বাংলাদেশে ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কোর্স জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সরকারি নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালে প্র্যাকটিস করার সুযোগ পান। এছাড়া, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা ইন নার্সিং ডিগ্রিধারীরা অধিকতর সুবিধা পেয়ে থাকেন।
সরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা ও প্রক্রিয়া
সরকারি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কোর্সে ভর্তি হতে হলে শিক্ষার্থীদেরকে কিছু যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করতে হয়। সাধারণত, ভর্তি হওয়ার শর্তগুলো নিম্নরূপ:
- শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
- এসএসসিতে জিপিএ ৩.০০ বা তদূর্ধ্ব প্রাপ্তি আবশ্যক।
- বয়সসীমা: সাধারণত ১৬-২২ বছরের মধ্যে হতে হবে।
ভর্তির প্রক্রিয়া সরাসরি আবেদন ও ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। ভর্তি পরীক্ষায় সাধারণত বিজ্ঞান বিষয়ের উপর প্রশ্ন থাকে এবং এসএসসির ফলাফলও বিবেচনা করা হয়।
ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কোর্সের সময়কাল ও কোর্স কাঠামো
ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কোর্সটি ৩ বছর মেয়াদি। এই কোর্সে প্রাথমিকভাবে তাত্ত্বিক শিক্ষা দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
কোর্সের প্রধান বিষয়গুলো হলো:
- প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা
- নার্সিং থেরাপি ও প্রক্রিয়া
- মেডিকেল সার্জারি
- শিশু ও মাতৃ স্বাস্থ্যসেবা
প্রশিক্ষণ শেষে শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিস করার সুযোগ দেওয়া হয়, যা তাদের দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করে।
বাংলাদেশের ৬৯টি সরকারি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কলেজের তালিকা:
নীচে বাংলাদেশের ৬৯টি সরকারি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কলেজের তালিকা দেওয়া হলো, যা ২০২৪ সালের জন্য আপডেট করা হয়েছে:
- ঢাকা নার্সিং কলেজ
- সিরাজগঞ্জ নার্সিং কলেজ
- রাজশাহী নার্সিং কলেজ
- খুলনা নার্সিং কলেজ
- চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজ
- বরিশাল নার্সিং কলেজ
- ময়মনসিংহ নার্সিং কলেজ
- সিলেট নার্সিং কলেজ
- কুমিল্লা নার্সিং কলেজ
- রংপুর নার্সিং কলেজ
- মাগুরা নার্সিং কলেজ
- দিনাজপুর নার্সিং কলেজ
- বগুড়া নার্সিং কলেজ
- ফরিদপুর নার্সিং কলেজ
- কিশোরগঞ্জ নার্সিং কলেজ
- টাঙ্গাইল নার্সিং কলেজ
- পঞ্চগড় নার্সিং কলেজ
- লালমনিরহাট নার্সিং কলেজ
- ঝালকাঠি নার্সিং কলেজ
- শরীয়তপুর নার্সিং কলেজ
- নড়াইল নার্সিং কলেজ
- ঝিনাইদহ নার্সিং কলেজ
- যশোর নার্সিং কলেজ
- পাবনা নার্সিং কলেজ
- মেহেরপুর নার্সিং কলেজ
- কুষ্টিয়া নার্সিং কলেজ
- সাতক্ষীরা নার্সিং কলেজ
- চুয়াডাঙ্গা নার্সিং কলেজ
- পটুয়াখালী নার্সিং কলেজ
- নোয়াখালী নার্সিং কলেজ
- লক্ষ্মীপুর নার্সিং কলেজ
- ফেনী নার্সিং কলেজ
- ব্রাহ্মণবাড়িয়া নার্সিং কলেজ
- চাঁদপুর নার্সিং কলেজ
- গাজীপুর নার্সিং কলেজ
- মানিকগঞ্জ নার্সিং কলেজ
- নারায়ণগঞ্জ নার্সিং কলেজ
- মুন্সিগঞ্জ নার্সিং কলেজ
- মাদারীপুর নার্সিং কলেজ
- রাজবাড়ী নার্সিং কলেজ
- গোপালগঞ্জ নার্সিং কলেজ
- খুলনার দৌলতপুর নার্সিং কলেজ
- বাগেরহাট নার্সিং কলেজ
- বান্দরবান নার্সিং কলেজ
- খাগড়াছড়ি নার্সিং কলেজ
- রাঙ্গামাটি নার্সিং কলেজ
- কক্সবাজার নার্সিং কলেজ
- টেকনাফ নার্সিং কলেজ
- ঠাকুরগাঁও নার্সিং কলেজ
- নীলফামারী নার্সিং কলেজ
- গাইবান্ধা নার্সিং কলেজ
- জয়পুরহাট নার্সিং কলেজ
- নাটোর নার্সিং কলেজ
- নওগাঁ নার্সিং কলেজ
- চাঁপাইনবাবগঞ্জ নার্সিং কলেজ
- সিরাজগঞ্জ নার্সিং কলেজ
- শেরপুর নার্সিং কলেজ
- নেত্রকোনা নার্সিং কলেজ
- জামালপুর নার্সিং কলেজ
- হবিগঞ্জ নার্সিং কলেজ
- মৌলভীবাজার নার্সিং কলেজ
- সুনামগঞ্জ নার্সিং কলেজ
- কিশোরগঞ্জ নার্সিং কলেজ
- গাইবান্ধা নার্সিং কলেজ
- নারায়ণগঞ্জ নার্সিং কলেজ
- ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ নার্সিং ইনস্টিটিউট
- সিলেট নার্সিং ইনস্টিটিউট
- চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ নার্সিং ইনস্টিটিউট
- রংপুর মেডিকেল কলেজ নার্সিং ইনস্টিটিউট
সরকারি নার্সিং কলেজে পড়াশোনার সুবিধা:
সরকারি নার্সিং কলেজে পড়াশোনা করলে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন:
কম খরচে মানসম্পন্ন শিক্ষা: সরকারি কলেজগুলোতে শিক্ষার খরচ তুলনামূলকভাবে কম, এবং শিক্ষার মান উন্নত।
প্রশিক্ষণের সুবিধা: সরকারি হাসপাতালে সরাসরি প্রশিক্ষণের সুযোগ পাওয়া যায়, যা শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা অর্জনে সহায়ক।
সরকারি চাকরির সুযোগ: ডিপ্লোমা ইন নার্সিং শেষ করার পর সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবায় চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
ডিপ্লোমা ইন নার্সিং এর পর উচ্চশিক্ষা ও কর্মক্ষেত্র:
ডিপ্লোমা ইন নার্সিং ডিগ্রি অর্জনের পর শিক্ষার্থীরা বিএসসি ইন নার্সিং করতে পারেন। এটি তাদের কর্মক্ষেত্রে আরও উন্নতি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, হাসপাতাল, ক্লিনিক, এনজিও, এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংস্থায় চাকরির সুযোগ রয়েছে।
উপসংহার:
বাংলাদেশের সরকারি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কলেজগুলো স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই কলেজগুলো থেকে নার্সিং পেশায় দক্ষ ও প্রশিক্ষিত পেশাজীবী তৈরি হচ্ছে, যারা দেশের স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত করতে অবদান রাখছে। সরকারি নার্সিং কলেজগুলোতে পড়াশোনা করে শিক্ষার্থীরা সাশ্রয়ী খরচে মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পান এবং সরকারি চাকরির বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিশ্চিত কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়।
যারা নার্সিং পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাদের জন্য সরকারি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কলেজগুলো একটি উত্তম বিকল্প। এখান থেকে অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতা ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষা এবং আন্তর্জাতিক কর্মক্ষেত্রেও কাজ করতে সহায়ক হতে পারে। তাই নার্সিং পেশায় আগ্রহীদের জন্য এই সরকারি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কোর্সটি ভবিষ্যতের জন্য একটি সুদূরপ্রসারী এবং উন্নত পথ খুলে দেয়।
FAQs (Frequently Asked Questions):
ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কোর্সের সময়কাল কত?
ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কোর্সটি সাধারণত ৩ বছরের একটি প্রোগ্রাম।
সরকারি নার্সিং কলেজে ভর্তি হতে কী যোগ্যতা প্রয়োজন?
সাধারণত এসএসসি ও এইচএসসি তে নির্দিষ্ট পরিমাণ জিপিএ অর্জন এবং ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়।
নার্সিং পেশার ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্র কেমন?
ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সম্পন্ন করার পর, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া বিদেশেও চাকরির প্রচুর সুযোগ রয়েছে।
নার্সিং শিক্ষার্থীদের জন্য কোন কোন দক্ষতা দরকার?
যোগাযোগ দক্ষতা, সহানুভূতি, চাপ ব্যবস্থাপনা, এবং দলবদ্ধভাবে কাজ করার ক্ষমতা একজন সফল নার্সের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ডিপ্লোমা ইন নার্সিং এর পর উচ্চশিক্ষার সুযোগ কী?
ডিপ্লোমা ইন নার্সিং শেষে বিএসসি ইন নার্সিং বা আরও উচ্চতর ডিগ্রির জন্য আবেদন করা যেতে পারে, যা ক্যারিয়ারের উন্নয়নে সাহায্য করে।
নার্সিং এডমিশন একাডেমির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url