৯ম পে স্কেল বেতন কত? নবম পে স্কেল ২০২৪ এর সর্বশেষ খবর
নবম পে স্কেল ২০২৪ এর সর্বশেষ খবর
২০২৪ সালের জন্য নবম পে-স্কেলের বিষয়ে সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, অর্থ মন্ত্রণালয় নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছে। তবে এখনো পে কমিশন গঠন করা হয়নি। কর্মচারী সংগঠনগুলো ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে। প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন এবং কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, নতুন বাজেটের আগে এই স্কেলের রূপরেখা প্রকাশ করা হতে পারে।
পে-স্কেল পর্যালোচনা: প্রয়োজনীয়তার বিশ্লেষণ
১৯৭৩ সালের প্রথম পে-স্কেল থেকে ২০১৫ পর্যন্ত পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, পাঁচ বছর অন্তর অন্তর নতুন পে-স্কেল জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী নবম পে-স্কেল এখন অতি জরুরি। ২০১৬ সালে পে-স্কেল কার্যকর হওয়ার পর আট বছর পার হয়ে গেছে, কিন্তু কোনো নতুন পে-স্কেল হয়নি। চলতি অর্থবছর পর্যন্ত বিভিন্ন কারণে নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন করা যায়নি।
সরকার বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণ দেখিয়েছে এবং স্বচ্ছতার অভাবও পরিলক্ষিত হয়েছে। স্বাধীন পে কমিশন গঠন করার প্রতিশ্রুতি থাকলেও তা এখনো হয়নি। তবে সরকারের তথ্য সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, একটি স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন গঠন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই কমিশন বৈষম্য দূরীকরণে ভূমিকা রাখতে পারে এবং নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়নের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
নবম পে স্কেল: বর্তমান প্রেক্ষাপট এবং কর্মচারীদের দাবি
অনেকেই নবম পে-স্কেল সম্পর্কে জানতে চান। আজকে মূলত সেই বিষয়ে আলোচনা করব এবং নবম পে-স্কেলের অগ্রগতি, সম্ভাবনা এবং এর সাথে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব। আমরা বারবার সরকারের কাছে আমাদের দাবিগুলো উপস্থাপন করেছি। সরকার আসলে কতটা কর্ণপাত করছে এবং এর বর্তমান অবস্থান কী, সেটি নিয়েই আজকের আলোচনা।
নবম পে স্কেল কবে আসবে?
সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে একটি প্রশ্ন বারবার উচ্চারিত হচ্ছে—নবম পে-স্কেল কবে আসবে? বাস্তবতা হচ্ছে, এখন পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দেওয়া হয়নি। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে যে সরকার বিষয়টি নিয়ে বিবেচনায় রয়েছে।
বর্তমান সরকার নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করার পর অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, অর্থনৈতিক অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়নের বিষয়ে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে নির্দিষ্ট সময়সীমা নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। কর্মচারী সংগঠনগুলোর দাবির প্রেক্ষিতে এই বছরের শেষ দিকে বা আগামী বছরের শুরুর দিকে নবম পে-স্কেল ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে।
কি কি সুবিধা আছে নবম পে স্কেলে?
নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন হলে সরকারি কর্মচারীদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা নিশ্চিত হতে পারে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
- বেতন কাঠামোর উন্নতি: নতুন পে-স্কেলে সর্বনিম্ন এবং সর্বোচ্চ বেতন বৃদ্ধির পাশাপাশি গ্রেডগুলোর পুনর্বিন্যাস হবে।
- মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি: বর্তমান মহার্ঘ ভাতার অপ্রতুলতার জায়গায় কর্মচারীদের জন্য নতুন সুবিধা আসতে পারে।
- বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধি: বর্তমান ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টকে ১০ শতাংশে উন্নীত করার সম্ভাবনা রয়েছে।
- চিকিৎসা ও যাতায়াত ভাতা বৃদ্ধি: চিকিৎসা ভাতা এবং যাতায়াত ভাতা পুনর্মূল্যায়ন করে কর্মচারীদের জন্য বাস্তবসম্মত পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে।
- পেনশন সুবিধা: পেনশন গ্র্যাচুইটির হার বৃদ্ধি করে কর্মজীবনের শেষ সময়ে কর্মচারীদের জন্য আর্থিক সুরক্ষা দেওয়া হবে।
এছাড়াও কর্মচারীদের বিভিন্ন দাবির ভিত্তিতে নতুন স্কেল আরও কিছু বিশেষ সুবিধা অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।
৯ম পে স্কেল বেতন কত?
নবম পে-স্কেলে সর্বনিম্ন বেতন ১৬,০০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ বেতন ৭৫,০০০ টাকা করার প্রস্তাব আলোচনা হচ্ছে। তবে এই প্রস্তাব এখনো অনুমোদিত হয়নি।
গ্রেড | পূর্বের স্কেল | নতুন স্কেল |
---|---|---|
১ | ৪০০০০ | ৭৮০০০ (নির্ধারিত) |
২ | ৩৫০০০ | ৬৩০০০-৭৬৪১০ |
৩ | ২৯০০০ | ৫৫০০০-৬৯৪০০ |
৪ | ২৫৭৫০ | ৫০০০০-৭৩২০০ |
৫ | ২২৫০০ | ৪৫০০০-৬৮৭১০ |
৬ | ১৮৭৫০ | ৩৯০০০-৬৩০১০ |
৭ | ১৬০০০ | ৩৫০০০-৫৫৬২৫ |
৮ | ১৩০০০ | ২৯০০০-৪৯৪৬০ |
৯ | ১১০০০ | ২৬৫০০-৪৪৫৩৫ |
১০ | ৯০০০ | ২৩৫০০-৩৬৫১০ |
১১ | ৬৫০০ | ২২৫০০-৩২৩১০ |
১২ | ৬০০০ | ১৯০০০-২৯৮১০ |
১৩ | ৫৫০০ | ১৬০০০-২৪৯৬০ |
১৪ | ৪৭৫০ | ১০২০০-২০৮১০ |
১৫ | ৪৪০০ | ৮৮০০-২০১১০ |
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে ৮,২৫০ টাকা সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারিত আছে, যা ২০১৫ সালের পে-স্কেল অনুযায়ী। মূল্যস্ফীতির কারণে এটি এখন অপ্রতুল। নতুন বেতন কাঠামোতে, কর্মচারীদের জন্য আরও সঠিক এবং বাজারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি কাঠামো নির্ধারণ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রভাব: বেতন বৃদ্ধি কেন জরুরি
নতুন পে-স্কেল জারি না হলে দেশের সরকারি কর্মচারীদের জীবনযাত্রায় অচলাবস্থা দেখা দিতে পারে। কারণ দেশের বাজারে পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে। চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ ছাড়িয়েছে, কিন্তু সরকারি কর্মচারীদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির হার মাত্র ৫ শতাংশ। এই বৈষম্যের কারণে প্রতি বছর সরকারি কর্মচারীদের আয় ক্রমশ কমে যাচ্ছে।
২০১৫ সালে যারা চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, তারা সর্বনিম্ন স্কেলে ৮,২৫০ টাকা বেতন পেতেন। আট বছর পর ২০২৪ সালে এখনও এই একই স্কেলে নতুন যোগদানকারীরা একই বেতন পাচ্ছেন, যা কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাওয়ায় এই বেতন দিয়ে এখন সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মহার্ঘ ভাতার দাবি: কর্মচারীদের প্রত্যাশা
নবম পে-স্কেল জারি না হলেও অন্তত মহার্ঘ ভাতার ঘোষণা আসা উচিত। নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীরা ধারদেনায় জর্জরিত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। বর্তমান গার্মেন্ট শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির বিষয়েও সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে, তা বাজার পরিস্থিতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
সরকারি কর্মচারীদের অন্তত ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া উচিত ছিল। তবে এখন পর্যন্ত মাত্র ১,০০০ টাকা বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে, যা কার্যত কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। কর্মচারীরা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন, এবং তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।
ইনক্রিমেন্ট নীতিমালা: পরিবর্তনের প্রয়োজন
বর্তমানে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ৫ শতাংশ রাখা হয়েছে, যা বর্তমান বাজার পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। মূল্যস্ফীতি যদি ১০ শতাংশ হয়, সেখানে ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট পর্যাপ্ত নয়। ইনক্রিমেন্টের হার অন্তত ১০ শতাংশ করা প্রয়োজন।
সরকারি কর্মচারীরা গ্রেড সংখ্যা কমিয়ে দশটি করার দাবিও জানিয়েছেন। পূর্বে ১৯৬৯ সালের পে-স্কেলে ১০টি গ্রেড ছিল, যা বর্তমান পরিস্থিতির জন্য একটি গ্রহণযোগ্য মডেল হতে পারে।
নতুন পে-স্কেল ঘোষণার প্রত্যাশা
সরকার বারবার বলছে, তারা এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছে। তবে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। কর্মচারী সমিতি, ব্রিগেড ও বিভিন্ন ফোরাম বারবার দাবি তুলেছে এবং আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের আশা, নতুন সরকার এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।
সরকারি কর্মচারীদের দাবি বিবেচনা করে নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়নের কাজ শুরু করা জরুরি। বাজারের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বেতন ও ভাতা নিশ্চিত করা না হলে কর্মচারীদের জীবনযাত্রার মান আরো নিম্নমুখী হতে থাকবে।
চিকিৎসা ও যাতায়াত ভাতা: অপ্রতুলতার পর্যালোচনা
বর্তমানে চিকিৎসা ভাতা এবং যাতায়াত ভাতার পরিমাণ অত্যন্ত অপ্রতুল। সারা মাসের জন্য মাত্র ১৫ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং ১০ টাকা যাতায়াত ভাতা দিয়ে কর্মচারীরা কোনোভাবেই তাদের প্রয়োজন মেটাতে পারছেন না। একজন চিকিৎসকের ফি এখন ৬০০ থেকে ১,০০০ টাকার মধ্যে, অথচ পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা ব্যয় বহনের জন্য কোনো কার্যকর সহায়তা নেই।
এছাড়া, যাতায়াত ভাতা হিসেবে মাত্র ১০ টাকা কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত নয়। এই ধরনের ভাতা বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
FAQs
1. নবম পে-স্কেল কবে জারি হবে?
সরকার এখনো নবম পে-স্কেলের বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তারিখ ঘোষণা করেনি। তবে কর্মচারী সংগঠনগুলোর চাপের মুখে এবং মূল্যস্ফীতির কারণে, ২০২৪ সালের শুরুর দিকে পে-স্কেল ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে।
2. নবম পে-স্কেলে বেতন কাঠামো কী হবে?
নবম পে-স্কেলে সর্বনিম্ন বেতন ১৬,০০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ বেতন ৭৫,০০০ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে এটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
3. নতুন পে-স্কেলে মহার্ঘ ভাতা কত বৃদ্ধি পেতে পারে?
নবম পে-স্কেলে মহার্ঘ ভাতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমান ভাতা কর্মচারীদের প্রয়োজন মেটাতে অপ্রতুল, তাই এটি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি উঠেছে।
4. ৯ম পে-স্কেলে কি বার্ষিক ইনক্রিমেন্টের হার বাড়বে?
হ্যাঁ, বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব বিবেচনায় রয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে কর্মচারীদের আয় মূল্যস্ফীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে।
5. নবম পে-স্কেলের সর্বশেষ আপডেট কোথায় পাওয়া যাবে?
নবম পে-স্কেলের সর্বশেষ খবরের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং কর্মচারী সমিতিগুলোর প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুসরণ করুন। এছাড়া নির্ভরযোগ্য গণমাধ্যমে নিয়মিত আপডেট প্রকাশিত হচ্ছে।
নার্সিং এডমিশন একাডেমির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url