NursingadmissionacademyPostAd

কলার খোসার অজানা উপকারিতা: ত্বক, দাঁত ও ঘর পরিষ্কার থেকে স্বাস্থ্য রক্ষায় ব্যবহার

কলার খোসার বহুমুখী উপকারিতা জানুন—ত্বক, দাঁত, ঘরের পরিষ্কার, বাগান পরিচর্যা এবং স্বাস্থ্য রক্ষায় এটি কীভাবে কার্যকর। কলার খোসা ব্যবহারের সহজ ও কার্যকর উপায় জানুন আজই।
কলার খোসার উপকারিতা


আসসালামু আলাইকুম রহমাতুল্লাহ,
আজকের আর্টিকেলটি পড়ার পর আর কখনওই কলার খোসা ফেলে দেবেন না, প্রিয় দর্শক। কেননা কলার চেয়েও কলার খোসা অনেক বেশি দামি। ফুড নিউট্রিশনিস্টরা কলার খোসাকে কোটি টাকা মূল্যের ওষুধ বলে থাকেন। আপনার যদি চোখের নিচের অংশ ফুলে গিয়ে থাকে এবং আপনি যদি চান আপনার চেহারা থেকে ব্রণের দাগ একদম দূর করতে, তাহলে অবশ্যই এই ভিডিওটি শেষ পর্যন্ত দেখুন। এই সকল রোগের চিকিৎসা কলার খোসা দিয়েই করা সম্ভব।

কলার খোসার স্বাস্থ্য উপকারিতা

আজকের কন্টেন্টে আমি আপনাদের জানাব, কীভাবে কলার খোসা দিয়ে আপনি ত্বক, চুল এবং দাঁতের যত্ন নিতে পারেন। এছাড়াও কলার খোসা দিয়ে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং যে কোনো ধরনের কাটা-ছেঁড়া ও পোকামাকড়ের কামড়ের প্রদাহ কমানো যায়। কলার খোসা ঘর পরিষ্কার করার ক্ষেত্রেও অত্যন্ত কার্যকর। আপনার ঘরের আসবাবপত্র এমনকি পুরনো অলঙ্কারকে নতুনের মতো ঝকঝকে করে তুলতে কলার খোসার বিকল্প নেই। এছাড়াও বাগান পরিচর্যায় কলার খোসা অসাধারণ উপকারী।

পুষ্টিগুণ

সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিটামিন বি৬, বি১২, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি উপাদান হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। পৃথিবীতে যে কোনো ফলের তুলনায় কলার খোসায় এই উপাদানগুলো বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। কলার খোসায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় এটি পেট পরিষ্কার রাখতে সহায়ক। অথচ আমরা সাধারণত কলা খেয়ে খোসা ফেলে দিই।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

অনেক রোগ আছে যা শুধুমাত্র কলার খোসা খেয়েই সেরে উঠতে পারেন। কলার খোসা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক। গবেষণায় দেখা গেছে, পাকা হলুদ কলার খোসা সবচেয়ে বেশি উপকারী। এটি রক্তে শ্বেতকণিকার পরিমাণ ঠিক রেখে ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক। সবুজ কলার খোসা খেতে চাইলে তা ১০ মিনিট সিদ্ধ করে খেতে পারেন। সবুজ কলার খোসায় থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড ট্রিপটোফ্যান ঘুম ভালো করতে সহায়তা করে এবং মানসিক অবসাদ দূর করতে সহায়ক।

কলার খোসা খাওয়ার পদ্ধতি

এশিয়ান দেশগুলোতে কাঁচা কলা খোসাসহ রান্না করে খাওয়ার চল রয়েছে। সবুজ কলার খোসাকে ব্লেন্ড করে ভাজি করেও খাওয়া যায়। পাকা কলার খোসা চিবিয়ে খাওয়া সম্ভব না, তবে এটি ব্লেন্ড করে খেজুর ও দুধের সাথে স্মুদি বানিয়ে খেতে পারেন।

ত্বকের যত্নে কলার খোসা

যদি চোখের নিচের অংশ ফুলে যায় বা কালো দাগ পড়ে, তাহলে কলার খোসার ভেতরের দিকটি ওই অংশে ঘষতে পারেন। চুলের যত্নে কলার খোসা ব্যবহার করা যেতে পারে; এটি ব্লেন্ড করে চুলের গোড়ায় লাগালে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে। দাঁত ঝকঝকে সাদা করার জন্যও কলার খোসা ব্যবহার করা যেতে পারে।

প্রাথমিক চিকিৎসায় কলার খোসা

বাচ্চাদের পোকামাকড় কামড় দিলে বা হাত-পা কেটে গেলে কলার খোসা লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিলে এটি অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে এবং জ্বালা-যন্ত্রণা কমায়। এটি ঠাণ্ডা করে ঘাড় ও কপালে লাগালে মাথাব্যথা কমাতে সহায়ক।

ঘরের পরিষ্কারে কলার খোসা

কলার খোসা দিয়ে ঘরের আসবাবপত্র, জুতা ও স্বর্ণ অলঙ্কার পরিষ্কার করতে পারেন। অলঙ্কার ঝকঝকে করতে কলার খোসা সিদ্ধ করে সেই পানিতে অলঙ্কারটি ভিজিয়ে রাখুন। এটি বাগান পরিচর্যার ক্ষেত্রেও কার্যকরী জৈব সার হিসেবে মাটির উর্বরতা বাড়ায়।

বাগান পরিচর্যায় কলার খোসার ব্যবহার

বাগান পরিচর্যায় কলার খোসা অত্যন্ত উপকারী। জৈব সারের মধ্যে কলার খোসা থেকে তৈরি সারের কার্যকারিতা অসাধারণ। এটি মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে এবং গাছের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে। আপনি চাইলে কলার খোসাকে টুকরো টুকরো করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে পারেন অথবা খোসা থেকে তৈরি তরল সার গাছে দিতে পারেন। এতে গাছ প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সহজেই পাবে এবং দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।

উপসংহার

কলার খোসার স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং নানাবিধ ব্যবহারিক দিকগুলো বিবেচনায় নিলে, এটি একটি মূল্যবান প্রাকৃতিক উপাদান। ত্বক ও চুলের যত্ন থেকে শুরু করে ঘর পরিষ্কার এবং বাগান পরিচর্যা—প্রতিটি ক্ষেত্রেই এটি অসাধারণভাবে কার্যকর। তাই কলার খোসাকে ফেলবেন না, বরং এর নানাবিধ ব্যবহার করে দেখুন এবং উপকারিতাগুলো কাজে লাগান।

কলার খোসা ব্যবহারের ওপর ৫টি প্রশ্নোত্তর (FAQ)

১. প্রশ্ন: কলার খোসা কেন ত্বকের যত্নে ব্যবহার করা হয়?

উত্তর: কলার খোসায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি ব্রণের দাগ দূর করতে সহায়ক এবং ত্বকের ফোলা বা কালো দাগ হ্রাসে কার্যকর। কলার খোসার ভেতরের অংশটি ত্বকে ঘষে ব্যবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ হয়।

২. প্রশ্ন: দাঁত সাদা করার জন্য কলার খোসা কিভাবে ব্যবহার করব?

উত্তর: কলার খোসার ভেতরের অংশ দিয়ে দাঁতে কয়েক মিনিট ঘষলে এতে থাকা পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ম্যাংগানিজ দাঁতের হলদে দাগ দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যবহারে এটি দাঁতকে ঝকঝকে সাদা করতে সহায়তা করে।

৩. প্রশ্ন: ঘরের আসবাবপত্র ও জুতা পরিষ্কারে কলার খোসা কীভাবে কার্যকর?

উত্তর: কলার খোসায় থাকা প্রাকৃতিক তেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আসবাবপত্র ও জুতায় জমে থাকা ময়লা দূর করতে সাহায্য করে। খোসাটি সরাসরি ময়লা জায়গায় ঘষলে আসবাবপত্র এবং জুতা আবারও নতুনের মতো চকচকে হয়ে যায়।

৪. প্রশ্ন: বাগানের জন্য কলার খোসা কীভাবে ব্যবহার করা যায়?

উত্তর: বাগানের মাটির উর্বরতা বাড়াতে কলার খোসা একটি চমৎকার জৈব সার হিসেবে কাজ করে। খোসাটি মাটির সাথে মিশিয়ে দিলে এটি গাছের জন্য প্রয়োজনীয় পটাসিয়াম এবং অন্যান্য পুষ্টি সরবরাহ করে। এছাড়া কলার খোসা পানিতে ভিজিয়ে সেই পানিটিও গাছে ব্যবহার করা যেতে পারে।

৫. প্রশ্ন: পাকা এবং কাঁচা কলার খোসার মধ্যে কোনটি স্বাস্থ্য উপকারিতায় বেশি কার্যকর?

উত্তর: পাকা হলুদ কলার খোসা স্বাস্থ্য উপকারিতায় বেশি কার্যকর, কারণ এটি রক্তে শ্বেতকণিকার সংখ্যা ঠিক রেখে ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে। অন্যদিকে, সবুজ বা কাঁচা কলার খোসায় ট্রিপটোফ্যান থাকায় এটি ভালো ঘুম এবং মানসিক শান্তি আনতে সাহায্য করে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নার্সিং এডমিশন একাডেমির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url